বরিশাল

অঢেল সম্পদ গড়েছেন চরফ্যাশন ইউএনও’র অফিস সহকারী সোহাগ

  প্রতিনিধি 14 September 2025 , 9:33:16 প্রিন্ট সংস্করণ

বরিশালবার্তা ডেস্ক:
ভোলার চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিস সহকারী (নাজির) সোহাগ একই কর্মস্থলে প্রায় ৮ বছর কর্মরত আছেন । ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসর হওয়ার সুবাদে আংগুল ফুলে কলা গাছ বনে গেছেন।
৫ আগষ্টের আগেও পরে এমন কোন অনিয়ম নেই,যেটা নাজির সোহাগ করেনি!
পৌরসভার সাবেক মেয়র মোর্শেদ মিয়ার বাড়ি সংলগ্ন এলাকায় নির্মাণ করছেন বহুতল বাড়ি বিল্ডিং । সরকারি কলেজের সামনে রয়েছে ১০শতাংশ জমি,বিএড কলেজে ও মুক্তাদির মোল্লা জামে মসজিদ সংলগ্ন এলাকায় রয়েছে আরও জমি।জনমনে প্রশ্ন একজন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিস সহকারীর বেতন কত? তিনি কিভাবে এত সম্পদের মালিক হয়েছেন।
এবিষয়ে অনুসন্ধান জানা গেছে, ২০২৩/২০২৪ অর্থ বছরে উপজেলার বিভিন্ন প্রকল্পের বরাদ্দের সরকারি ভ্যাটের অংশ ভ্যাট আউডিতে যোগ করতে হয়।নাজির সোহাগ সেই ভ্যাটের লক্ষ লক্ষ টাকা আইডিতে জমা না দিয়ে নিজে আত্মসাৎ করেছেন।
টাকার বিনিময়ে প্যানেল চেয়ারম্যান :
৫ আগষ্ট ২৪ শেখ হাসিনার পালিয়ে যাওয়ার পর নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত চরফ্যাশন উপজেলার ২১টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানগণ পালিয়ে আত্নগোপনে চলে যায়। নাজির সোহাগ একাধিক ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান থেকে চেয়ারম্যান বানায় জনপ্রতি ৫/ ৭ লক্ষ টাকা নিয়ে।
নাজির সোহাগ নিজের মামা শ্বশুরকে এওয়াজপুর মিনা বাজারের খাদ্যবান্ধব
কর্মসূচির ডিলার বানিয়েছেন।
এব্যাপারে জিন্নাগড় ইউনিয়ন পরিষদের ৫নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবু জাহের ফরাজী সাংবাদিককে বলেন, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর নৌকা প্রতীকে
নির্বাচিত চেয়ারম্যানগনও পালিয়ে আত্নগোপনে চলে যায়। চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিস সহকারী (নাজির) সোহাগ বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য ডেকে বলেন, আমি আপনাদেরকে প্যানেল চেয়ারম্যান থেকে চেয়ারম্যান বানিয়ে দিবো।আমাকে ৫লক্ষ টাকা করে দিতে হবে।একাধিক প্যানেল চেয়ারম্যান সোহাগকে ৫/৭ লক্ষ টাকা করে দিয়েছে।
কয়েকজন প্যানেল চেয়ারম্যান থেকে চেয়ারম্যানও হয়েছে। এখনও আছে।
আবু জাহের ফরাজী আরও বলেন,আমি চরফ্যাশন পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের জমি বিক্রি করে সোহাগকে নগদ ৩লক্ষ টাকা দিয়েছি। ২লক্ষ টাকা পরে দেওয়ার শর্তে আমাকে প্যানেল চেয়ারম্যান থেকে চেয়ারম্যান বানায়। কিন্তু বাকী ২লক্ষ টাকা দিতে দেরি হাওয়ার কারণে আমার চেয়ারম্যান পদ বাতিল করতে সোহাগ জনগণকে উসকনি দিয়ে আমার বিরুদ্ধে মিছিল করায়।
মিছিলের পর আমি ২লক্ষ টাকা আবারও নাজির সোহাগকে দিয়েছি অথচ আমাকে চেয়ারম্যান পদে বহাল করেনি । নাজির সোহাগকে দেওয়া ৫ লক্ষ টাকা ফেরত চাইলে দেই দিচ্ছি বলে সময় নিচ্ছে। উপজেলা তার অফিসে গেলে ভাড়াটিয়া গুন্ডা দিয়ে আমাকে তাড়িয়ে দেয়।আমি জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে এর বিচার দাবি করছি।
পাশাপাশি দুনীতিবাজ নাজির সোহাগের অপসারন চাই।
অন্যের বউ ভাগিয়ে ২য় বিবাহ:
জিন্নাগড় ইউনিয়ন যুবদলের নেতা হান্নান মুনসী আমার দেশকে বলেন,নাজির সোহাগের চরিত্রও খারাপ। নিজের স্ত্রী, সন্তান থাকার পরও এক প্রবাসীর স্ত্রীকে এইচএসসি পড়ুয়া সন্তানসহ ভাগিয়ে এনে বিয়ে করেন সোহাগ। ২ বউকে পৌরসভার মধ্যে আলাদা আলাদা বিলাসবহুল বাড়িতে রাখছেন।
পৌরসভা ৪নং ওয়ার্ডে বিলাসবহুল বাড়ি নির্মাণ : উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিসসহারী (নাজির) সোহাগ চরফ্যাশন পৌরসভার প্রাণ কেন্দ্র ৪নং ওয়ার্ড ভদ্রপাড়ায় ৪ তলা বিশিষ্ট একটি বাড়ি নির্মাণ করছেন। সরজমিনে গেলে
বাড়ির ঠিকাদার আলমগীর হোসেন এই প্রতিবেদককে বলেন, এই বাড়িটি সোহাগ ভাইয়ের।দীর্ঘ ৫/৬ মাস ধরে নির্মাণ কাজ চলছে। কাজ শেষের পথে।
এই ব্যাপারে চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিস সহকারী (নাজির) সোহাগ বলেন,আমার ২ ভাই প্রবাসী,তাদের টাকা বাড়ি নির্মাণ ও জমি কিনেছি। প্যানেল চেয়ারম্যান বানিয়ে টাকা নেওয়ার বিষয়টি সত্য নয় বলে দাবি করেন তিনি। ভ্যাট আইডিতে চালান মাধ্যমে টাকা জমা দেওয়ার কথা বলেছেন,কিন্তু কোন জমার রশিদ দেখাতে পারেনি।
এদিকে তৎকালীন চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বর্তমানে তেজগাঁও জরিপ অধিদপ্তরের চার্জ কর্মকর্তা নওরিন হক এর কাছে বক্তব্য নিতে ফোন দেওয়া হয়েছে। ফোনটি বন্ধ থাকায় হোয়াটসঅ্যাপ ম্যাসেজ দেওয়া হয়েছে, তিনি কোন রিপ্লাই দেননি।

আরও খবর

                   

জনপ্রিয় সংবাদ