প্রতিনিধি 20 September 2025 , 6:24:10 প্রিন্ট সংস্করণ
স্টাফ রিপোর্টার ::
বরিশাল বিএডিসি অফিসে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত চঞ্চল কুমার মিস্ত্রির বিরুদ্ধে একের পর এক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠছে। তিনি সাবেক আওয়ামী সরকারের সময় পূর্তমন্ত্রী শ. ম. রেজাউল করিমের ঘনিষ্ঠ আস্থাভাজন ছিলেন।
অভিযোগ রয়েছে, বরিশাল জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক ছিলেন তার ঠিকাদারি ব্যবসার অংশীদার। বিভিন্ন সরকারি টেন্ডার ও লাইসেন্স বাণিজ্যে আব্দুর রাজ্জাকের নাম ব্যবহার করতেন তিনি। সম্প্রতি যমুনা টেলিভিশনের এক প্রতিবেদনে একটি রাবার ড্যাম নির্মাণে দুর্নীতির প্রমাণ সামনে আসে। কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী সিকিউরিটি মানি ফেরত না দেওয়া সত্ত্বেও একই প্রকল্পে আবারও বরাদ্দ এনে দরপত্র আহ্বান করেন চঞ্চল কুমার মিস্ত্রি।
সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী, কাজ সমাপ্তির পর এক বছর পর্যন্ত ঠিকাদারদের ১০% অর্থ সিকিউরিটি হিসেবে জমা রাখতে হয়। কাজের মান খারাপ হলে সেই অর্থ বাজেয়াপ্ত হওয়ার নিয়ম থাকলেও এ ক্ষেত্রে তা মানা হয়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চঞ্চল কুমার মিস্ত্রি তার নিজস্ব প্রভাববলয় ব্যবহার করে অনৈতিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন। সম্প্রতি তিনি ঝালকাঠি থেকে সহকারী প্রকৌশলী সৈয়দ জামালকে বদলি করে আনেন। জামাল ছিলেন আব্দুর রাজ্জাকের ব্যবসায়িক অংশীদার এবং তার বিরুদ্ধে নিম্নমানের কাজের অভিযোগ থাকলেও কোন পদক্ষেপ না নিয়ে পূর্ণ বিল পরিশোধ করা হয়। পরবর্তীতে অডিটে সমস্যা ধরা পড়লে সেটি ঢাকতে অতিরিক্ত অর্থ দিয়ে রিপেয়ার কাজ করানো হয়।
এছাড়া গৌরনদীতে কর্মরত উপ-সহকারী প্রকৌশলী শাহেদ চৌধুরীর বিরুদ্ধেও গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। কৃষকের সেচ স্কিম থেকে অতিরিক্ত অর্থ গ্রহণ ও বিভিন্ন সাব কন্ট্রাক্টের কাজ অবৈধভাবে নিজে সম্পন্ন করে অর্থ আত্মসাত করেন তিনি। একাধিকবার বদলির পরও আবার গৌরনদীতে তার পুনঃপোস্টিং করান চঞ্চল কুমার মিস্ত্রি।
বর্তমানে বরিশাল বিএডিসির কার্যক্রমে নির্বাহী প্রকৌশলীসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা তার প্রভাববলয়ের কারণে জবুথুবু অবস্থায় রয়েছেন। তার অনুমতি ছাড়া কোনো ফাইল এগোয় না বলে অভিযোগ উঠেছে। এমনকি প্রকল্প পরিচালকের পদে নিয়োগের ক্ষেত্রেও তিনি চাপ প্রয়োগের চেষ্টা করেছিলেন বলে জানা গেছে।
কৃষি খাতে এ ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ বারবার উঠলেও অদৃশ্য ক্ষমতার কারণে এসব অপরাধীরা বহাল তবিয়তে রয়ে যাচ্ছে। ক্ষমতার পালাবদল হলেও বরিশাল বিএডিসির এই প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য কমছে না।